অবশেষে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে জন্মনিবন্ধনে জনভোগান্তি কমলো
- প্রকাশিত : ০৭:৫৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১ ৫২৩ বার পঠিত
মোঃ সুরুজ্জামান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ যে জন্মসনদ কোন একসময় ম্বেবারগণ বাড়ি বাড়ি দিয়ে যেতেন তা আজ যেন আকাশের চাঁদ হয়ে গেছে। শুরুতে ফর্মে লেখা জন্মনিবন্ধন থাকিলেও তা বর্তমানে ডিজিটালে রুপান্তর ও ডিজিটালাইজড জন্মসনদ দেয়া হচ্ছে।
গত ২২/০৯/২০২০ ইং পূর্ব পর্যন্ত একটি বাচ্চার জন্মসনদ করতে ডিজিটালে রুপান্তার করার শুরু হতে একটি টিকার কার্ড, মাতাপিতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিলেই জন্ম সনদ পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে একটি জন্মসনদ করতে টিকার কার্ড, পিতামাতার অনলাইন জন্মনিবন্ধন (বাধ্যতামূলক), পিতামাতার পরিচয় পত্রের কার্ড, বাচ্চার নানার ভোটার আইডি কার্ড, বসতবাড়ির টেক্স পরিশোধের রশিদ, মাতা পিতার সচল মোবাইল নম্বরসহ বাচ্চার পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি লাগে। এছাড়াও বাচ্চার নানা- নানী, দাদা- দাদীর ভোটার আইডি না থাকলে বা মৃত্যুবরণ করলে অনলাইনকৃত মৃত্যু সনদ লাগে।
যা বাচ্চার অভিভাবকের অনলাইনকৃত জন্মসনদ করতে আবশ্যিক।
কোন সন্তানের জন্মসনদ করতে প্রাথমিকভাবে মাতাপিতার জন্মসনদ করতে হবে এবং তাদের বয়স প্রমাণের জন্য ডাক্তারী সার্টিফিকেট প্রয়োজন ছিল তা উঠানো আরেক ভোগান্তির কাজ।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগীরা বলেন, ‘একটি ডাক্তারি প্রত্যয়নপত্র আনতে ৫০০-৬০০ টাকা, পরিষদে জন্মসনদ বাবদ ২০০/-, ফটো্কপি, ছবি বাবদ ১০০/-, যাতায়াত বাবদ ২০০/- টাকাসহ মোট প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে যেত। ডাক্তারী সনদ আনতে আরেক ভোগান্তির কাজ ছিল। এক্ষেত্রে সময় ও অযথা অর্থ নষ্ট হতো।
সরকার আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েছে এবং সেখানে প্রত্যেক নাগরিকের জন্ম তারিখ, মাস, সাল স্পষ্টভাবে লাল অক্ষরে লিখা আছে। তাহলে নতুন করে অভিভাবকের বয়স প্রমাণের সনদ কি প্রয়োজন? যার জন্য ডাক্তারী সনদ বা প্রত্যয়নপত্র আনতে হবে? এটি কি বাড়তি ঝামেলা না? যাইহোক ডাক্তারী সনদ এখন আর লাগেনা বিধায় জনভোগান্তি কিছুটা কম হলো। ,
এছাড়াও পূর্বের করা করা হাতে লেখা জন্মসনদে জন্মসালে ভূল, নামে ভূল, পিতামাতার স্থলে ভূল, সনদে ছেলের নাম কিন্তু লিঙ্গে মেয়েসহ শতকরা ৯০ ভাগই ভূল সেগুলো ঠিক করতে ও একই ঝামেলা ছিল। স্কুল- কলেজে ভর্তি, চাকুরী, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে জন্ম সনদের কোন বিকল্প নাই। তাই সুনিদির্ষ্ট কাঠামো ও হাই সিকিউরিটি রেখে পাশাপাশি জনদুর্ভোগ যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে গুরুত্বপূর্ণ জন্মসনদটি দিতে সরকার নজর দিতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যেক্তা আজিজুল বলেন, ” আসলে ডাক্তারী সার্টিফিকেট আনা ঝামেলার কাজ তাই পরিষদ হতে এটি জমা নিয়ে জন্মসনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অংশ হতে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে যাদের শিক্ষাজীবনের কোন সনদ নাই তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারী প্রত্যয়নপত্র আবশ্যিক। তবে বাইরে থেকেও দোকান বা এন্ড্রোয়েড মোবাইল এর মাধ্যমে আবেদন করা যায়।’
৫নং অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাহাবুবুর রহমান সুজন কালের ধারা ২৪ এর প্রতিনিধিকে জানান, ‘‘ আসলে হয়রানি নয়। নিয়ম এখনো আছে তবে উপরমহল হতে স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছুটা নিয়ম শিথীল করতে বলা হয়েছে। ৪৫দিনের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা শিশুর জন্মসনদে কোন ফি নেই না। আমরা ৪৫ দিনের বাচ্চার অভিভাবকের জন্মসনদ পর্যন্ত ফি নেই না।”
এ বিষয়ে ৫নং অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব রহিজ উদ্দিন আকন্দ বলেন, ’ডাক্তারী সার্টিফিকেট ব্যতিত জন্মসনদ ইউ. এন. ও অফিস হতে অনুমোদন দেয় না। বয়স সংশোধনের জন্য ও এটা দিতে হবে।”
চেয়ারম্যান মহোদয় আরো জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার এমন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তারা যেন কোন মতেই এদেশের নাগরিক না হতে পারে বা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে’’
জনসাধারণ মনে করেন, সর্বোচ্চ সিরিউরিটি স্বরুপ ভোটার আইডির ফটোকপি, বাড়ির পর্চা, মাঠ পর্চা, দলিলাদি, সর্বশেষ নামজারির পর্চা এবং কি টেক্স আদায়ের রশিদ, বিদ্যুত বিলের কাগজ, ইউটিলিটি বিলের কাগজ প্রত্রসহ পৈত্রিক ও জন্মসূত্রে আমরা এবং আমাদের বাচ্চা-কাচ্চা তারা এদেশের নাগরিক তা প্রমাণ স্বরুপ ফটোকপি জমা নিয়েও সরকার আমাদের জন্মসনদ দিতে পারে।
উল্লেখ্য যে, এ বিষয়ে কালের ধারা ২৪ এ বছরের ১২ জানুয়ারি জন্মসনদ পাওয়া নিয়ে জনভোগান্তির সংবাদ প্রকাশ করে।