টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নে জন্মসনদ পাওয়া নিয়ে জনভোগান্তি
- প্রকাশিত : ০৫:০২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ ১৩৬১ বার পঠিত
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নে জন্মসনদ পাওয়া নিয়ে জনভোগান্তি
মোঃ সুরুজ্জামান, ভূঞাপুর, (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ যে, জন্মসনদ কোন একসময় মেম্বারগন বাড়ি বাড়ি দিয়ে যেতেন তা আজ যেন আকাশের চাঁদ হয়ে গেছে। শুরুতে ফর্মে লেখা জন্মনিবন্ধন থাকিলে তা বর্তমানে ডিজিটালে রুপান্তর ও ডিজিটাল জন্মসনদ দেয়া হচ্ছে। গত ২২/০৯/২০২০ ইং পূর্ব পর্যন্ত একটি বাচ্চার জন্মসনদ করতে ডিজিটালে রুপান্তার করার শুরু হতে একটি টিকার কার্ড, মাতাপিতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিলেই জন্ম সনদ পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে একটি জন্মসনদ করতে টিকার কার্ড, পিতামাতার অনলাইন জন্মনিবন্ধন (বাধ্যতামূলক), পিতামাতার পরিচয় পত্রের কার্ড, বসতবাড়ির টেক্স পরিশোধের রশিদ, মাতা পিতার সচল মোবাইল নম্বরসহ বাচ্চার পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি লাগে।
উপরোক্ত বিষয়ের মাতাপিতার জন্মসনদ শুরুতে করতে হবে এবং তাদের বয়স প্রামাণের জন্য ডাক্তারী সার্টিফিকেট পয়োজন তা উঠানো আরেক ভোগান্তির কাজ। এ বিষয়ে ভূক্তভোগীরা বলেন, একটি ডাক্তারি প্রত্যয়নপত্র আনতে ৫০০-৬০০ টাকা, পরিষদে জন্মসনদ বাবদ ২০০/-, ফটো্কপি, ছবি বাবদ ১০০/-, যাতায়াত বাবদ ২০০/- টাকাসহ মোট প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।
শুধু তাই না পূর্বের করা করা হাতে লেখা জন্মসনদে জন্মসালে ভূল, নামে ভূল, পিতামাতার স্থলে ভূল, সনদে ছেলের নাম কিন্তু লিংগে মেয়েসহ শতকরা ৯০ ভাগই ভূল সেগুলো ঠিক করতে ও একই ভোগান্তি। স্কুল- কলেজে ভর্তি, চাকুরী, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে জন্ম সনদের কোন বিকল্প নাই। তাই ভোগান্তির ও শেষ নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, এক ভূক্তভোগী বলেন, এতো টাকা খরচ করে জন্ম সনদ করা আর মরার উপর খড়া ঢালা একই কথা, সরকার থেকে আবার শিওর ক্যাশের একাউন্ট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে । স্কুলের মাষ্টার বলেছেন নতুন সিম কিনতে যার জন্য ২০০/- টাকা গুনতে হচ্ছে। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ যাবো কোথায়? সরকার এহক সময় এহক নিয়ম করে’।
এ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদে যোগযোগ করা হলে, হিসাব সহকারি রেজাউল করিম সোহাগ বলেন, সরকারি নিয়মে জন্মসনদ করা হচ্ছে, শুধু এখানে না সারাদেশে একইভাবে জন্মসনদ দেওয়া হচ্ছে। জন্মনিবন্ধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে মানুষের ভোগান্তি হলে আমি কি করবো’
৫নং অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাহাবুবুর রহমান সুজন কালের ধারা ২৪ এর প্রতিনিধিকে জানান, ‘‘জন্মসনদ করতে, স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী হলে টিকাদান কর্মী বা শিক্ষকদের প্রত্যয়ন পত্র লাগবে সাথে আরো তাদের শিক্ষাগত সার্টফিকেট লাগবে বাকী সবার অভিভাবকদের জন্মসনদ করতে ডাক্তরী সনদ বা প্রত্যয়ন পত্র লাগবে।
ফি-এর পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি আরো জানান-
ফি স্বরুপ আবেদনে-৫০ /-, সনদে-৫০/-, পরিষদে ৫০/- এবং উদ্যেক্তা ফি বাবদ ৫০ টাকাসহ সর্বমোট ২০০/- লাগে। এর অতিরিক্ত অর্থ আমরা নেই না।’’
এ বিষয়ে আরো জানতে ৫নং অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব রহিজ উদ্দিন আকন্দ বলেন, ‘‘ কে বলছে জন্মসনদে ১০০০-১৫০০ লাগে। সেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আনুন আর আমার পরিষদের কে টাকা নিয়েছে তার নাম বলুন। আমি তার বিচার এখই করমু। ফি স্বরুপ আবেদনে-৫০ /-, সনদে-৫০/-, পরিষদে ৫০/- এবং উদ্যেক্তা তার কোন বেতন নাই ফলে ফি বাবদ ৫০ টাকাসহ সর্বমোট ২০০/- লাগে। এর অতিরিক্ত অর্থ আমরা নেই না।’’
ডাক্তার যদি এক প্রত্যয়নপত্র বা সার্টিফিকেটে ৫০০-৬০০/- টাকা নেয় সেটা তাদের ব্যাপার, তাদের ধরুন। আগে এক সফটওয়্যারে জন্মসনদ করতে হতো এখন বেড়ে আরেকটা হয়েছে। নতুন সফটওয়্যারে নতুন নিয়মে কাজ চলছে।
কারণ জানতে চাইলে, চেয়ারম্যান মহোদয় আরও জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার এমন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তারা যেন কোন মতেই এদেশের নাগরিক না হতে পারে বা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে’’
জনসাধারণের দাবী, ভোটার আইডির ফটোকপি, বাড়ির পর্চা, মাঠ পর্চা, দলিলাদি, সর্বশেষ নামজারির পর্চা এবং কি টেক্স আদায়ের রশিদ, বিদ্যুত বিলের কাগজ, ইউটিলিটি বিলের কাগজ প্রত্রসহ পৈত্রিক ও জন্মসূত্রে আমরা এবং আমাদের বাচ্চা-কাচ্চা তারা এদেশের নাগরিক তা প্রমাণ স্বরুপ ফটোকপি জমা নিয়েও সরকার আমাদের জন্মসনদ দিতে পারে। এতে ডাক্তারদের নিকট ঘোরাফেরা ও ৫০০-৬০০/- অন্তত বাচতো। জনভোগান্তিও কম হতো ।