বানারীপাড়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন ৫টি সংগঠন এমপির বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ সত্য নয়
- প্রকাশিত : ০৬:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২ ২০৩ বার পঠিত
বানারীপাড়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন ৫টি সংগঠন এমপির বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ সত্য নয়
নাহিদ সরদার বানারীপাড়া প্রতিনিধি: বরিশালের বানারীপাড়ায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের বিরুদ্ধে ১২ সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা জানতে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৫টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। ২৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর গৌতম সমদ্দার এবং উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেবকুমার সরকারের নেতৃত্বে ৫টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল উপজেলার উদয়কাঠি ইউনিয়নের পশ্চিম তেতলা গ্রামে পরিদর্শনে যান।
এসময় তারা রতন ঘরামী,সুমন রায় ও সুব্রত শিকদারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বিকাল ৪টায় বানারীপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সরেজমিন পরিদর্শনে তারা যা জানতে ও দেখতে পেরেছেন তা বিশদভাবে তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সমদ্দার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২৫ ও ২৬ জানুয়ারী মঙ্গল ও বুধবার বিভিন্ন জাতীয়,আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের বিরুদ্ধে বানারীপাড়ায় ১২টি সংখ্যালঘু পরিবারের বসতভিটাসহ সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ শিরোণামে প্রকাশিত সংবাদ দেখে আমরা আজ ২৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। সেখানে ১২টি পরিবার নয় তিনটি পরিবারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এরমধ্যে রতন ঘরামী এগ্রো ফার্মের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের কাছে স্বেচ্ছায় ৫০ শতক সম্পত্তি ১৪ লাখ টাকায় বিক্রির জন্য বায়না করে বলে জানতে পারি। ২৪ জানুয়ারী ওই সম্পত্তি তার লিখে দেওয়ার কথা ছিল। সেজন্য রতন ঘরামী তার নিজের ছবি,আইডি কার্ড,জমির দলিল ও রেকর্ড পরচাসহ যাবতীয় কাগজপত্র স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহিম বেপারীর কাছে দেন। দলিল লেখা সম্পন্ন হওয়ার পরে তা লিখে দিতে রতন ঘরামী হঠাৎ তালবাহানা শুরু করে। এর কারন রেকর্ডে ৩১.৫০ শতক সম্পত্তি থাকায় সে ৫০ শতক সম্পত্তির ওই ১৪ লাখ টাকা দাবি করে আসছিলো। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহিম বেপারী এমপির পক্ষে ৩১.৫০ শতক সম্পত্তির মূল্য বাবদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে রতন ঘরামীর বাড়ি যায়। মূলত ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য এর অর্ধেকেরও কম। তারপরেও সে ১৪ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। এদিকে রতন এর আগে ওই সম্পত্তি সুমন রায়দের কাছ থেকে বিভিন্ন দাগে ক্রয় করে। যার মধ্যে সুমন রায়দের বাড়ির দাগও উল্লেখ ছিল। ফলে সুমন রায়দের পরিবারের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয় রতন এমপির কাছে এগ্রো ফার্মের জন্য ওই সম্পত্তি বিক্রি করলে তাদের বসতবাড়ি বেদখল হয়ে যাবে। এনিয়ে রতন ঘরামী ও সুমন রায়দের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন : ৩০ শতাংশ মানুষ জীবনসঙ্গীর থেকে লুকিয়ে টাকা নয়-ছয় করেন, দাবি মার্কিন সমীক্ষা
একপর্যায়ে সুমন রায় তার স্বার্থ হাসিল করার অসৎ উদ্দেশ্যে একটি স্বার্থান্বেষী প্রভাবশালী মহলের কু-প্ররোচনায় সহজ-সরল রতন ঘরামীকে বরিশালে নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করায়। বরিশালের ওই সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সরেজমিন পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে বানারীপাড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে ৫টি সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের জানান। তারা জানান,বসতভিটা দখল চেষ্টার যে অভিযোগ আনা হয়েছে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে রতন ঘরামী যে সম্পত্তি বিক্রির জন্য বায়না করেছে তা পতিত নিচু জমি। রতন ঘরামী ও সুমন রায়দের বসতবাড়ি থেকে পতিত এ জমির দূরত্ব কমপক্ষে ২ হাজার গজ দূরে।
তাছাড়া সেখানে দখল চেষ্টার অভিযোগ সত্য নয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ এলাকার উন্নয়নে এগ্রো ফার্মের জন্য ওই জমি ক্রয় করতে চাওয়া হয়েছে,দখল চেষ্টা করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে বানারীপাড়া উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেবকুমার সরকার,পৌর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুমম রায় সুমন,বরিশাল জেলা ছাত্র ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি সুমন দেবনাথ,বানারীপাড়া উপজেলা যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিপন বনিক,পৌর পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বড়াল,উপজেলা ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি হৃদয় সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল প্রেসক্লাবে রতন ঘরামী সংবাদ সম্মেলন করে বসতভিটাসহ সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ তোলেন।