সিরাজগঞ্জে ফুল থেকে মধু সংগ্রহের ধুম
মাসুদ রেজা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের নয়টি উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকার শর্ষে ক্ষেতে এখন মধু সংগ্রহের ধুম। ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত চাষী।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, বেলকুচি, চৌহালী, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় শর্ষে খেত থেকে চলছে মধু আহরণ। জেলার নয়টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে শর্ষে চাষ করা হয়েছে।
এসব শর্ষে খেতগুলিতে চলছে মধু আহরণ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,শর্ষে ক্ষেত গুলিতে মধু আহরণকারীরা ব্যস্ত সবাই।
কেউ বাক্স থেকে মধু বের করছেন, কেউ বাক্স ঠিক করে দিচ্ছেন, কেউবা ড্রামে মধু ভরছেন।
এবারে শর্ষের ফলন ভালো হওয়ায় মধু আহরণ ভালো হবে বলে আশা করছেন চাষীরা। আগ্রহী লোকজনও হাতের কাছেই খাঁটি মধু পেয়ে কিনে বাড়ী নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক ই-কমার্স ব্যবসায়ী আলোচনা করছেন তাদের কাছ থেকে মধু নিয়ে ব্যবসা করবেন।স্বাভাবিক ভাবে চাষীরা মাঠ থেকে প্রতি কেজি মধু মাঠ থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩৩৬টি মৌচাষের খামার আছে। প্রতিটি খামারে ১৫০ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত মৌ বাক্স আছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ২০ হাজার কেজি মধু আহরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত মৌসুমে আহরণকৃত মধুর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১০ হাজার কেজি। চলতি মৌসুমের গত ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১ হাজার ৩৪৭ কেজি মধু আহরণ করা হয়েছে।
কৃষি ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষণা অনুযায়ী, উদ্ভিদের পরাগায়নে মৌমাছির গুরুত্ব অপরিসীম। মৌমাছির মাধ্যমে বাক্স পদ্ধতিতে মধু আহরণ করে কৃষি খাতে উৎপাদন ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব, কিন্তু এ বিষয়ে কৃষকের ধারণা স্পষ্ট নয়। তাই এ ব্যাপারে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে এবং এ ব্যাপারে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যাতে করে অনেক বেশি মানুষ মৌ চাষে উৎসাহিত হয়। এর ফলে দেশে মধু উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এতে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা যেমন জোরদার হবে তেমনি কৃষি অর্থনীতিতে আর একটি নতুন লাভজনক খাত তৈরি হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপপরিচালক আবু হানিফ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ মৌসুমে শর্ষের ফলন ভাল হয়েছে।শর্ষের ফলন ভালো হওয়ায় আশা করছি মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে।